ধর্ষণে জন্ম নেওয়া শিশুকে ওয়ারিশ হিসেবে গণ্যের আদেশ

ধর্ষণে জন্ম নেওয়া শিশুকে ওয়ারিশ হিসেবে গণ্যের আদেশ

রংপুরের পীরগাছায় প্রতিবন্ধী নারীকে ধর্ষণের ফলে সন্তান জন্মদানের ঘটনায় দায়ের করা মামলায় অভিযুক্ত ব্যক্তির যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত।

রোববার (১৭ জানুয়ারি) দুপুরে রংপুরের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আদালত-২ এর বিচারক মো. রোকনুজ্জামান এ রায় দেন।

পাশাপাশি আদালত ওই ধর্ষণের ফলে জন্ম নেওয়া শিশুকে ভরণপোষণসহ ধর্ষকের ওয়ারিশ ঘোষণা করেছেন। তবে এই মামলা চলাকালীন ২০১৭ সালে ধর্ষিতা মেয়েটি নিখোঁজ হয়। আজও তাকে উদ্ধার করতে পারেনি পুলিশ। এ ব্যাপারে ধর্ষকের বিরুদ্ধে পৃথক আরও একটি মামলা চলমান।  

নারী ও শিশু নির্যাতন দমন বিশেষ ট্রাইব্যুনালের বিশেষ পিপি জাহাঙ্গীর আলম তুহিন বলেন, আসামিকে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড, এক লাখ টাকা জরিমানা এবং ধর্ষণের ফলে জন্ম নেয়া শিশুকে ওয়ারিশ হিসেবে গণ্যের আদেশ দিয়েছেন আদালত।  অর্থাৎ ধর্ষক আবুল কালামের সম্পত্তির ওয়ারিশ হিসেবে গণ্য হবে। তিনি বলেন, পাশাপাশি আসামির সম্পত্তি না থাকলে শিশুর ব্যয়ভার রাষ্ট্রকে বহনের নির্দেশও দিয়েছেন আদালত। 

প্রায় এক যুগের আইনি লড়াইয়ের পর এই রায় পেয়ে আবেগে আত্মহারা হলেও নির্যাতিতা মেয়েটির বাবা বলেন, মামলা চলাকালীন ২০১৭ সালে প্রতিবন্ধী মেয়েটিকে অপহরণ করে মামলার আসামি। মাকে ফিরে পেতে চায় তার ১১ বছরের শিশুটি।

বিশেষ পিপি জাহাঙ্গীর আলম তুহিন বলেন, অপহরণের বিষয়টি পৃথক মামলা হিসেবে রয়েছে। ভিকটিমকে এখনও উদ্ধার করতে পারেনি পুলিশ।

রায় ঘোষণার পর দণ্ডিত আবুল কালামকে রংপুর কেন্দ্রীয় কারাগারে নিয়ে যাওয়া হয়।

২০০৮ সালের ১লা ডিসেম্বর প্রতিবন্ধী ওই মেয়েটিকে ধর্ষণ করে জেলার পীরগাছা উপজেলার হরিরাম গ্রামের আব্দুল জলিলের বখাটে ছেলে আবুল কালাম আজাদ। প্রভাবশালী হওয়ায় মেয়ের পরিবার তাৎক্ষণিক প্রতিকার চাইতে পারেনি।

কিন্তু ধর্ষণের ফলে সে গর্ভবর্তী হওয়ায় ক্রমেই তার শারীরিক পরিবর্তন স্পষ্ট হতে থাকে এবং পরের বছর ৮ সেপ্টেম্বর বাক প্রতিবন্ধী মেয়েটি একটি ছেলে সন্তান প্রসব করে চরমভাবে অসুস্থ হয়ে পড়ে। সন্তানের বাবার স্বীকৃতি আদায়ের আরজি নিয়ে পরিবারটি পুলিশের দ্বারস্থ হলেও পুলিশ মামলাটি গ্রহণ করেনি। ফলে ২০০৯ সালের ১০ সেপ্টেম্বর আদালতে এ মামলাটি দায়ের করেন মেয়ের বাবা। দীর্ঘদিনের আইনি লড়াইয়ের পর এ রায়ে খুশি তিনি। 

আপনি আরও পড়তে পারেন